২১শে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য ও ভাষণ ২০২৪

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমরা প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা শহীদদের স্মরণে এই দিবস পালন করে থাকি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক সংগঠন কর্তৃক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়ে থাকে। সে সকল আলোচনা সভায় অনেকেই বক্তব্য বা ভাষণ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বা কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কে একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য রাখতে হয়।

অনেকেই একুশে ফেব্রুয়ারিতে কি ধরনের বক্তব্য রাখবেন বা ভাষণ প্রদান করবেন তা বুঝে উঠতে পারে না। তাই অনেকেই ইন্টারনেটে একুশে ফেব্রুয়ারির নমুনা বক্তব্য বা ভাষণ খুঁজে থাকেন। এজন্য আজকের এই পোস্টে আমি আপনার সাথে একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য বা ভাষণ কিভাবে রাখতে হয় বা কিভাবে বক্তব্য রাখলে সেটি শ্রুতি মধুর ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে তা জানাবো। এর সাথে সাথে আপনার জন্য অনেক সুন্দর একটি একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য নমুনা শেয়ার করব। আপনি চাইলে নমুনাটি আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে পিডিএফ ফাইল আকারে সংগ্রহ করতে পারবেন।

২১শে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যে কোন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার পূর্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকেই সম্ভাষণ জানাতে হবে। তারপর আস্তে আস্তে আপনি মূল আলোচনায় প্রবেশ করতে পারবেন। আলোচনা চেষ্টা করবেন সংক্ষিপ্ত রাখার এবং শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কথাবার্তা রাখার। অযথা অবাঞ্ছিত কথাবার্তা বাড়িয়ে বক্তব্য দীর্ঘ করার প্রয়োজন নেই। মূল কথাগুলো প্রায় শেষ হয়ে যাবার পর সম্ভাষণ জানিয়ে আপনার বক্তব্য বা ভাষণ শেষ করতে পারেন।

ফেব্রুয়ারির বক্তব্য রাখার পূর্বে যথেষ্ট পরিমাণে প্র্যাকটিস করে নেওয়া দরকার। তা না হলে মাঝে মাঝে আপনি আটকে যাবেন বা বক্তব্য দিতে অসুবিধা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত সময় নিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য বা ভাষণ কিভাবে প্রদান করবেন সে সম্পর্কে নিজেই একটি আইডিয়া তৈরি করুন। প্রয়োজনে আপনার বক্তব্যটি একটি নোট খাতায় ছোট করে লিখতে পারেন। আজকের এই পোস্টে আপনার জন্য একটি সুন্দর একুশে ফেব্রুয়ারির নমুনা বক্তব্য শেয়ার করব।

আরও দেখুনঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ( ২১শে ফেব্রুয়ারি ) রচনা – PDF

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য বা ভাষণের নমুনাঃ

আমি আমার বক্তব্যের শুরুতেই সম্মানিত সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বৃন্দ ও মঞ্চের সম্মুখে উপবিষ্ট সুধীজন সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সালাম, আসসালামু আলাইকুম।

ফুল পাখি নই, নইকো পাহাড়
ঝর্ণা সাগর নই
মায়ের মুখের মধুর ভাষায়
মনের কথা কই।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
শহীদ ছেলের দান
আমার ভাইয়ের রক্তে লেখা
ফেব্রুয়ারির গান।

আজ এমন একটি দিন, যেদিন না আসলে আমরা কখনই মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারতাম না। পেতাম না একুশের চেতনার  হাত ধরে লাল-সবুজ পতাকা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট একদিনে তৈরি হয়নি, বাঙালি জাতির আত্ম অন্বেষণের ও অধিকার আদায়ের সচেনতা বহিঃপ্রকাশ এই অমর একুশ। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন সংলগ্ন আমতলায় ছাত্র সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নুরুল আমিন সরকার আরোপিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা। ছাত্র সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দশজন মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙবে। ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙলো।

সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ অনেকে শহীদ হয়েছিল। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যদি সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারেরা  মায়ের ভাষার দাবিতে প্রান না দিত, তাহলে কখনোই আমরা রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেতাম না। সেই আন্দোলন কেবল ভাষার জন্যই ছিল না, সে আন্দোলন ছিল পাকিস্তানী শাসন-শোষণের রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে বাঙালির দৃঢ় প্রতিবাদ।

বিভিন্নভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকেরা বাঙালিকে দমন-পীড়ন করার চেষ্টা চালিয়েছিল। বাঙালির সচেতনতা ও প্রতিবাদী দুর্বার আন্দোলনে তারা বার বার পিছু হটতে বাধ্য হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি মানেই তাই মাথা নত না করার এমন এক রক্তাক্ত ইতিহাস যার হাত ধরে আমরা অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীনতা। একুশে ফেব্রুয়ারি যেন বাঙালির অঘোষিত স্বাধীনতা দিবস। শুধু বাঙালি নয় বিশ্বের প্রতিটি জাতির মাতৃভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও মানুষের মতো বাঁচার দাবির সংগ্রামের দুর্জয় অনুপ্রেরণা একুশে ফেব্রুয়ারি।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালির রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। আজ তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবং ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশ সমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের শিখিয়েছে আত্মত্যাগের মন্ত্র, বাঙালিকে করেছে মহীয়ান। মহান ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে এসেছে বহু আকাঙ্খিত স্বাধীনতার চেতনা। যে চেতনার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ আগামীর দিকে। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার এই বক্তব্য এখানেই শেষ করছি, আসসালামু আলাইকুম।

See More: [PDF] আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ – সকল ক্লাস

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বক্তব্য – PDF

যে সকল ব্যক্তিগণ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন তারা চেষ্টা করবেন সংক্ষিপ্ত একটি বক্তব্য রাখার জন্য। এতে করে আধুনিক সমাজের যুবকেরা মহান ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারবে ও সচেতন হতে পারবে। আজকের এই পোস্টে আমি দেখিয়েছি কিভাবে একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য বা ভাষণ রাখতে হয়। এর সাথে একটি সুন্দর নমুনা বক্তব্য শেয়ার করেছি। আপনি চাইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এই বক্তব্যটি পিডিএফ আকারে আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে সংগ্রহ করতে পারেন। নিচের সংগ্রহ বাটনে ক্লিক করে খুব সহজেই বক্তব্যটি সংগ্রহ করুন।

এখানে ভিজিট করুন

সর্বশেষ কথা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমাদের সকল ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারি। আজকের এই পোস্টে আমি আপনার সাথে একটি সুন্দর নমুনাসহ একুশে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য বা একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষণ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করি এখানে উল্লেখিত নমুনাটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। আপনি চাইলে এই নমুনাটি অনুসরণ করে আপনার মত একটি বক্তব্য  বা ভাষণ একুশে ফেব্রুয়ারির আলোচনা সভায় রাখতে পারেন।

আরও দেখুনঃ

২১শে ফেব্রুয়ারি মহান মাতৃভাষা দিবসের স্লোগান ২০২৪

[PDF] আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ ২০২৪ – সকল ক্লাস

২১ শে ফেব্রুয়ারি ফেসবুক স্ট্যাটাস, শুভেচ্ছা বার্তা ও মেসেজ

২১শে ফেব্রুয়ারি ছবি, পিকচার ও পোস্টার HD 

২১শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে উক্তি ও ছন্দ ২০২৪

One thought on “২১শে ফেব্রুয়ারির বক্তব্য ও ভাষণ ২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *