মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর। পিডিএফ

এখানে মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর দেওয়া আছে। মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনীতে মংডুর লােকদের খাদ্যাভ্যাস, অধিবাসীদের পােশাক-পরিচ্ছদ, ধর্মীয় পরিচয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন। মিয়ানমারের অধিবাসীরা তাদের ঐতিহ্যকে লালন করে। পােশাকের দিক থেকেও তাদের ঐতিহ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। উদ্দীপকেও মণিপুরিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পােশাক পরিধান করে।

মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল ১ঃ 

রহমান সাহেব পেশায় প্রকৌশলী। দাপ্তরিক কাজে তিনি সিঙ্গাপুরে যান। সেখানকার পরিকল্পিত রাস্তাঘাট দেখে, অত্যাধুনিক আরামদায়ক গাড়িতে চড়ে তিনি অভিভূত হন। সেখানে একটি বিলাসবহুল সুসজ্জিত হােটেলে তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। হােটেলে ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, বলরুমসহ যাবতীয় সুবিধাদি পেয়ে তিনি মুগ্ধ হন।

ক. সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতাে বস্ত্রটির নাম কী?
খ. ‘লুঙ্গি, ফুঙ্গি ও প্যাগােড়া এই তিন নিয়ে মিয়ানমার।’- বাক্যটি বুঝিয়ে লেখাে।
গ. উদ্দীপকে হােটেলে রহমান সাহেবের অবস্থা এবং ‘মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের অবস্থার তুলনামূলক আলােচনা করাে।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণ কাহিনীর সমগ্র ভাব প্রকাশ করেনি।”— মূল্যায়ন করাে।

সৃজনশীল ২ঃ 

রনির মনে প্রশ্ন জাগে নেপালিদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে। নেপাল প্রবাসী মামা তাকে জানান, নেপালি খাদ্য দুত রান্না করা যায় এবং খেতে দারুণ সুস্বাদু, ‘গােড্রোক টিডাে’ নেপালের একটি জনপ্রিয় খাবার যা গম ও সবুজ সবজি এবং ভুট্টা দিয়ে তৈরি। নেপালি শিশুরা ‘ভেজিটেবল টুম্পা’ নামে খাদ্য খেতে পছন্দ করে। এছাড়া ‘আলু টমা’ তাদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী খাবার।

ক. মংডু কোথায় অবস্থিত?
খ. মংডুতে মহিলারা চির স্বাধীন কেন?
গ. উদ্দীপকের মন্তব্য কীভাবে ‘মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ঘ. ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন খাদ্যাভ্যাস গড়ে উঠেছে’ উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির আলােকে বিশ্লেষণ করাে।

মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

উত্তর ১ঃ 

ক। সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতাে বস্তুটির নাম থামি ।

খ। মিয়ানমারের সংস্কৃতির বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক আলােচ্য উক্তিটি করেছেন।

মংডুর অনেক জায়গা ঘুরেও লেখক কারও পরনে প্যান্ট দেখেননি। বর্মিরা সবাই লুঙ্গি পরেছেন। অফিস কাচারিতেও মানুষ লুঙ্গি পরেছে। আবার মিয়ানমারে ফুঙ্গি তথা বৌদ্ধ ভিক্ষুর সংখ্যাও বেশি। বৌদ্ধদের ধর্ম-উপাসনালয় প্যাগােডার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তাই লেখক বার্মাতে এসবের আধিক্য দেখে বলেছেন ‘লুঙ্গি, ফুঙ্গি ও প্যাগােডা এ তিন নিয়ে মিয়ানমার।

গ।

উদ্দীপকে হােটেলে রহমান সাহেবের অবস্থা এবং ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের অবস্থার মধ্যে সুযােগ-সুবিধাগত বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়।

মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনির লেখক যে হােটেলে রাত্রি যাপন করেন তার অবস্থা খুবই শােচনীয়। আর উদ্দীপকের রহমান সাহেব যে হােটেলে ওঠেন সেটা বিলাসবহুল ও সুসজ্জিত হােটেল। এখানেই তাদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য সৃষ্টি করেছে।

উদ্দীপকের প্রকৌশলী রহমান সাহেব দাপ্তরিক কাজে সিগাপুরে যান। সেখানে একটি বিলাসবহুল হােটেলে তার থাকার ব্যবস্থা হয়। হােটেলে ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, বলরুমসহ যাবতীয় সুবিধাদি পেয়ে তিনি মুগ্ধ হন। অন্যদিকে মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনীর লেখক যে হােটেলে উঠেছিলেন তার অবস্থা ছিল খুবই শােচনীয়। কাঠের মেঝে, পর্তুগিজরা কাঠের দেওয়াল, উঁচু-নিচু চষা জমির মতাে বিছানা এবং মশারিতে বিচিত্র ও উৎকট দুর্গন্ধ। লেখকের মতে, সেখানকার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, কোনাে ভদ্রলােক সেখানে থাকাটা অসম্ভব বলেই মনে করবেন।

অথচ উদ্দীপকের রহমান সাহেব এমন একটি হােটেলে উঠেন যেখানে সব ধরনের আধুনিক সুযােগ-সুবিধা বিদ্যমান। এদিক দিয়ে উদ্দীপকের রহমান সাহেবের সাথে ‘মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনির লেখকের অবস্থার বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

ঘ।

উদ্দীপকে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর একটি দিককে ধারণ করলেও সমগ্র ভাব প্রকাশ করেনি।

মংডুর পথে রচনাটি একটি ভ্রমণকাহিনি। এখানে লেখক দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। এখানে লেখকের হােটেলে রাত্রি যাপন ছাড়াও মংডুর মানুষের আচার-সংস্কৃতির বিবরণ পাওয়া যায়। কিন্তু উদ্দীপকে কেবল রহমান সাহেবের হােটেলে রাত্রি যাপনের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

উদ্দীপকের রহমান সাহেব একজন প্রকৌশলী। তিনি দাপ্তরিক কাজে সিঙ্গাপুরে যান। সেখানকার পরিকল্পিত রাস্তাঘাট দেখে, আরামদায়ক গাড়িতে চড়ে বিলাসবহুল হােটেলে থাকার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত হয়েছে। এই হােটেলে ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, বলরুমসহ যাবতীয় সুবিধাদি পেয়ে তিনি মুগ্ধ হন।

‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের হােটেলে রাত্রি যাপন ছাড়াও মংডু সফরের সকল বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। অথচ উদ্দীপকে কেবল রহমান সাহেবের সিঙ্গাপুরে বিলাসবহুল হােটেলে রাত্রি যাপনের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। মংডুর পথে রচনায় যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলাে উদ্দীপকে অনুপস্থিত। এই রচনায় লেখকের হােটেলে রাত্রিযাপন ছাড়াও মংডুর মানুষের পােশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। কিন্তু উদ্দীপকে এগুলাে আসেনি। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির সমগ্র ভাব প্রকাশ করেনি।

উত্তর ২ঃ 

ক। মংডু মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত।

খ। মংডুর মেয়েদের পছন্দমতাে পেশা বেছে নেওয়া এবং চলাফেরার স্বাধীনতা থাকায় তাদেরকে চিরম্বাধীন বলা হয়েছে।

মংডু শহরের মেয়েরা পুরুষের পাশাপাশি কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে। তারা শহরের রাস্তাঘাটে অবাধে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে। রাস্তার মােড়ের পানের দোকান থেকে শুরু করে হােটেল-রেস্তোরার মালকিন হওয়ার সুযােগও তারা লাভ করে। আর এজন্যই তাদেরকে চিরস্বাধীন বলা হয়েছে।

গ।

স্বতন্ত্র খাদ্যাভ্যাসের দিক দিয়ে উদ্দীপকের মন্তব্য ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

জগতে নানা জাত-সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। এক এক সম্প্রদায়ের আচার-সংস্কৃতি এক এক রকম। প্রত্যেক জাতির পােশাক-পরিচ্ছদ ও খাদ্যাভ্যাসে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে যেগুলাে তাদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। ঠিক তেমনিভাবে উদ্দীপকের নেপালিরা এবং আলােচ্য ভ্রমণকাহিনীতে মংডুর অধিবাসীরা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।

উদ্দীপকে নেপালিয়ানদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে। রনির মনে নেপালিয়ানদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রশ্ন জাগলেও তার নেপাল প্রবাসী মামা রনির প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নেপালি খাদ্যের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, নেপালি খাদ্য দ্রুত রান্না করা যায় এবং খেতেও দারুণ সুস্বাদু হয়। গােড্রোক-টিডাে’ নামক খাবারটি নেপালের একটি জনপ্রিয় খাবার যা গম ও সবুজ সবজি এবং ভুট্টা দিয়ে তৈরি হয়। আবার নেপালি শিশুরা ভেজিটেবল টুম্পা’ নামক খাদ্য খেতে বেশ পছন্দ করে। এছাড়াও ‘আলু টমা তাদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী খাবার। ‘মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনীতেও মিয়ানমারের খাদ্যাভ্যাসের বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। যেমন- পােড়া লঙ্কা ভর্তা তার সাথে কচি লেবুপাতা, নুডলস, পােড়া লঙ্কাগুঁড়া, তেঁতুলের টক, কলার ঘােড় দিয়ে তৈরি সবজি স্যুপ, ডিমসেদ্ধ এগুলাে মিয়ানমারের প্রচলিত খাবার। তাদের এ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের খাবার তাদের ঐতিহ্যকে বহন করে।

আবার উদ্দীপকের নেপালিদের স্বতন্ত্র খাবার তাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে আছে। এভাবে খাদ্যাভাসের স্বাতন্ত্রের দিক উদ্দীপকের নেপালীদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত মন্তব্যটি ‘মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতা রয়েছে।

বিভিন্ন জাতিগােষ্ঠীর মধ্যে যেমন সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে ঠিক তেমনিভাবে ভিন্নতা রয়েছে খাদ্যাভ্যাসেও। এক জাতির খাদ্যাভ্যাসের সাথে অন্যজাতির খাদ্যাভ্যাস মেলে না। তেমনিভাবে মিয়ানমারের জনগােষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ও স্বতন্ত্র খাদ্যাভ্যাস।

উদ্দীপকের রনির মনে নেপালের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রশ্ন জাগে । তার সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় সে তার নেপাল প্রবাসী মামার কাছে। | মামা তাকে নেপালের খাদ্যের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানান। মামা বলেন, নেপালি খাদ্য রান্না করতে কম সময় লাগলেও তা খেতে দারুণ সুস্বাদু। গেড্রোক টিডাে নেপালের একটি জনপ্রিয় খাবার নেপালি শিশুরা ভেজিটেবল টুম্পা’ নামক খাদ্য পছন্দ করে।

মংডুর পথে ভ্রমণকাহিনীতে লেখক মিয়ানমারবাসীর অন্যান্য পরিচয়ের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের পরিচয়ও তুলে ধরেছেন। মিয়ানমারের খাবারগুলাের মধ্যে রয়েছে পােড়া লঙ্কা ভর্তা, লুডলস, তেতুলের টক, কলার থােড় দিয়ে তৈরি সবজি স্যুপ, ডিমসেদ্ধ ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য সবজি আবার উদ্দীপকের নেপালিদেরও রয়েছে স্বতন্ত্র খাদ্যাভ্যাস। এগুলাে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের খাদ্যাভ্যাস একরকম আবার ভারতের খাদ্যাভ্যাস অন্যরকম। সুতরাং আমরা বলতে পারি, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন খাদ্যাভ্যাস গড়ে উঠেছে’- উক্তিটি যথার্থ।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পেতে আমার সাথেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করা হয়।

আরও দেখুনঃ

সুখী মানুষ-মমতাজ উদ্‌দীন আহমদ। ৮ম শ্রেণি

আমাদের লোকশিল্প -কামরুল হাসান। বাংলা ১ম পত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *