আপনি চাইলে ঘরে বসেই আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে আপনার ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে পারবেন। এই কাজটি করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম জাতীয় পরিচয় পত্রের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে সর্বপ্রথম আপনার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য প্রদানের মাধ্যমে একাউন্টে রেজিস্ট্রেশন করবেন। এরপর সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে অ্যাকাউন্ট সেকশন থেকে আপনার আইডিটি লগইন করুন এবং প্রোফাইল অপশন এ প্রবেশ করুন। এখানে আপনি আপনার পূর্বের প্রদানকৃত সকল তথ্য দেখতে পারবেন। আপনার যে তথ্যটি সংশোধন করার প্রয়োজন সেটি নতুন করে ইনপুট করুন এবং সংশোধনের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ফি প্রদান করুন। সর্বশেষ আপনার সংশোধনকৃত তথ্য গুলো সঠিক প্রমাণ স্বরূপ প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট স্ক্যান করে নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করুন এবং আবেদনটি সাবমিট করুন। বিস্তারিত জানতে নিচে দেখানো ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।
জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২৩
আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডে যদি কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে তা ঘরে বসেই সংশোধন করতে পারবেন। পূর্বে এই পরিচয়পত্র সংশোধন করা অনেক কঠিন কাজ ছিল। বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট নিয়ে এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি দৌড়াদৌড়ি করা লাগতো। কিন্তু এখন চাইলে আপনি নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনের মাধ্যমেই তথ্য হালনাগাদ বা সংশোধন করতে পারবেন।
যে সকল বাংলাদেশী নাগরিকগণ ইন্টারনেটে জাতি পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে বেশ কয়েকটি দাঁত ফলো করে আপনি এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন। পোষ্টের নিচের অংশে আমি ধাপে ধাপে এ কাজটি কিভাবে করতে হবে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।
ধাপ ১: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর ছবি বা স্কান কপি সংগ্রহ করা।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর ছবি তোলা বা স্কান করে নেয়া। কেননা সংশোধনকৃত তথ্য গুলো যে সঠিক তা প্রমাণ স্বরূপ আপনাকে এই তথ্য গুলা প্রদান করতে হবে। তাই স্কানার এর সাহায্যে প্রথমে আপনার ডকুমেন্টস গুলো স্কান করে নিন এবং আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে সংরক্ষণ করুণ।
ধাপ ২: NID ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করুণ
এপর্যায়ে আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি আকাউন্ট খুলতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন করার সময় আপনাকে অবশ্যই ফেইস ভেরিফিকেশন করতে হবে। তাই আপনকে আপনার মোবাইলে নির্বাচন কমিশনের মোবাইল এপটি ইনস্টল করে নিতে হবে। এছাড়াও আরও প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাদ্ধমে আপনার রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করুণ।
ধাপ ৩: তথ্য সংশোধন
সফলভাবে রেজিষ্ট্রেশন করা হয়ে গেলে আপনার একাউন্টে লগইন করুণ এবং প্রোফাইল সেকশনে চলে যান। এখানে আপনি পূর্বে প্রদানকৃত সকল বিস্তারিত তথ্য যেমনঃ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পিতা মাতার নাম ও আরও অনন্যা তথ্য দেখতে পারবেন। নিচের ছবিটি দেখুন।
তথ্য গুলো সংশোধন বা পরিবর্তন করতে চাইলে আপনাকে উপরের ডান দিকে নীল রঙের এডিট অপশনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর নিচের ছবির মত একটি পেইজ আপনার সামনে আসবে। এখানে আপনি আপনার তথ্যগুলো পুনরায় ইনপুট করে এডিট করার সুযোগ পাবেন।
এখন আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক বক্সে ক্লিক করুন, এবং আপনার সঠিক তথ্য লিখুন। অবশ্যই আপনি স্কান করে প্রদানকৃত ডকুমেন্টস এর সাথে মিল রেখে তথ্য গুলো পুরন করুণ।
তথ্য গুলো ইনপুট করা হয়ে গেলে আরেকবার মিলিয়ে নিন, তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ উভয়ই দেখতে পাবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
ব্যাস এই ধাপের কাজ শেষ। কিন্তু এই ওয়েব পেইজটি অবশ্যই আপনাকে খুলে রাখতে হবে, কোন ভাবেই এটি ক্লোজ করবেন না, কারণ ফি প্রদানের পর আপনাকে এই পেইজ থেকেই পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করতে হবে।
ধাপ ৪: ফি প্রদান
এবার আপনার ফি প্রদানের পালা। আপনার সংশোধন এর ধরণ অনুযায়ী আপনাকে ফি প্রদান করতে হবে। ইতোপূর্বেই আমি আপনাদের সাথে ভোটার আইডি / জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে খুব সহজেই আপনার রকেট, বিকাশ, ওকে ওয়ালেট বা ভিসা কার্ড থেকে খুব সহজেই NID তথ্য সংশোধন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্রের সংশোধন ফি কিভাবে প্রদান করতে হয় এনিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের পরবর্তী পোস্টগুলো দেখতে পারেন।
ধাপ ৫: ডকুমেন্ট আপলোড ও আবেদন ফরম সংগ্রহ
এ পর্যায়ে আপনাকে পূর্বে সংরক্ষিত ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি গুলো নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করতে হবে। আপনার সংশোধনের ধরন অনুযায়ী ফাইল গুলো আপলোড করে নিন এবং পুনরায় ড্যাশবোর্ডের তথ্যগুলো যাচাই করে নিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার আবেদনটি সাবমিট বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ করুন। সর্বশেষ আপনাকে অবশ্যই আবেদনের একটি কপি সংগ্রহ করে নিতে হবে এবং আপনি চাইলে এটি প্রিন্ট করে আপনার কাছে সংরক্ষণ করতে পারেন। এটি পরবর্তীতে কাজে লাগবে।
শেষ কথা
জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করবেন, যেন পরিবর্তনকৃত তথ্য পুনরায় ভুল না হয়। আজকের পোষ্টে আমরা আপনাদের সাথে অনলাইনে কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিতভাবে তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনারা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং পোস্টে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করলে খুব সহজেই আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন।
আরও দেখুনঃ
ভোটার আইডি / জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত?
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে?
অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করার নিয়ম ২০২৩
মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার বের করার নিয়ম ২০২৩
আমি সুজন। আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা পলিটেকনিকে পড়ালেখা করছি। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।