কালুরঘাট চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণাঞ্চলে বহদ্দারহাটের ৫/৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি এলাকা। কালুরঘাট বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার একটি ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান। এটি কর্ণফুলী নদীর উপর অবস্থিত একটি বিখ্যাত সেতুর জন্য পরিচিত, যা কালুরঘাট ব্রিজ নামে পরিচিত। ব্রিটিশ আমলে ১৯৩০ সালে নির্মিত এই সেতুটি রেল ও সড়ক পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা তখনকার সময়ে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের অঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সেতুটি আজও ঐতিহাসিক দিক থেকে এবং পরিবহন ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালুরঘাট দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
কালুরঘাট দর্শনীয় স্থান
চট্টগ্রাম মহানগরের মধ্যেই কালুরঘাট অবস্থিত। কালুরঘাট এলাকাটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্যও একটি আকর্ষণীয় স্থান। কর্ণফুলী নদীর তীরে এর অবস্থান, নদীর ওপর সেতুর দৃশ্য, এবং আশেপাশের গ্রামীণ পরিবেশ এই স্থানকে অনন্য করে তোলে। এছাড়া, যারা নদীভ্রমণ পছন্দ করেন, তারা এখান থেকে নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
কালুরঘাটের নিকটবর্তী এলাকায় কিছু ঐতিহাসিক ও শিল্প কারখানাও রয়েছে, যা চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালুরঘাটে মূল আকর্ষণটি হলো কালুরঘাট ব্রিজ, যা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই এলাকা তেমন কোনো বড় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত নয়, তবে কিছু আকর্ষণীয় স্থান ও কার্যকলাপ রয়েছে যা প্রকৃতিপ্রেমী এবং ইতিহাসে আগ্রহী মানুষদের আকৃষ্ট করতে পারে।
কালুরঘাট ব্রিজ
এটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত একটি দ্বৈত সেতু, যা রেল ও সড়ক পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি কর্ণফুলী নদীর উপর স্থাপিত এবং এর আর্কিটেকচার বেশ নজরকাড়া। এই ব্রিজটি পার হয়ে নদীর দৃশ্য উপভোগ করা একটি মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা হতে পারে।
কর্ণফুলী নদী
কালুরঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলী নদী নিজেই একটি সুন্দর স্থান। নদীর তীরে বসে সময় কাটানো, নৌকা ভ্রমণ করা, বা ট্রলারে নদীর ওপর ঘুরে বেড়ানো উপভোগ্য হতে পারে।
কালুরঘাট শিল্প এলাকা
এখানে বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা রয়েছে, যা চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। কারখানাগুলির আধুনিক এবং পুরানো অবকাঠামো স্থানীয় শিল্পের ইতিহাস এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বোঝার সুযোগ দেয়।
প্রাকৃতিক পরিবেশ
কালুরঘাটের আশেপাশের গ্রামীণ পরিবেশ এবং নদীর ধারের গাছপালা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য বেশ মনোমুগ্ধকর। শান্ত পরিবেশে হাঁটাহাঁটি বা ছবি তোলা এখানে একটি জনপ্রিয় কার্যকলাপ হতে পারে।
এছাড়াও, কালুরঘাটের আশেপাশের এলাকায় কিছু ছোট ছোট স্থানীয় বাজার এবং খাদ্যকেন্দ্র রয়েছে, যেখানে স্থানীয় খাবার উপভোগ করতে পারেন। তবে মনে এয়াখতে হবে কালুরঘাট তেমন পর্যটক স্থান নয়।
কালুরঘাট দর্শনীয় স্থান কোথায়
১৯৩০ সালে ঐতিহাসিক কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ সম্পন্ন হয়, যা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই সেতুটি বিশেষ গুরুত্ব পায়, কারণ এর নিকটস্থ বহদ্দারহাট এলাকায় স্থাপিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। কালুরঘাট সেতুর নামানুসারে এই বেতার কেন্দ্রটি পরিচিতি লাভ করে “কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” নামে। বর্তমানে এই বেতার কেন্দ্রটি “কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র” হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অন্যতম সাক্ষ্যবহন করে। তবে এখানে তেমন কোনো দর্শনিয় স্থান নেই।
উপরের উল্লেখিত স্থান গুলো কালুরঘাটে বেশ পরিচিত। কালুরঘাটে ভ্রমণে আসলে এই স্থান গুলোতে আসতে হবে। এই স্থান গুলো ব্যাতিত সেখানে ভ্রমণের জন্য কোনো পর্যটক এলাকা নেই। কালুরঘাটের চারপাশের গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক দৃশ্যও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে সেতুর পারের গাছপালা, নদীর ধারে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা বা ছবি তোলা অনেকেই উপভোগ করেন। এই স্থানগুলোতে ভ্রমণকারীরা কালুরঘাটের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করতে পারেন।
কালুরঘাট বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার একটি ঐতিহাসিক স্থান, যা চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি মূলত কর্ণফুলী নদীর তীরে এবং কালুরঘাট শিল্প এলাকায় অবস্থিত। কালুরঘাট ব্রিজ চট্টগ্রাম শহরকে বোয়ালখালী উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করে। কালুরঘাট, কর্ণফুলী নদীর তীর, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ। এই ঠিকানায় আসলে কালুরঘাট দর্শনীয় স্থান গুলো ভ্রমণ করতে পারবেন।
আরও দেখুনঃ
সি ওয়ার্ল্ড চট্টগ্রাম কিভাবে যাবো [লোকেশন]
আমি সুজন। আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা পলিটেকনিকে পড়ালেখা করছি। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।