চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কোথায় অবস্থিত [লোকেশন]

১৯৮৮ সালে, চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান এবং চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মিলে ফয়েজ লেকের চত্বরে একটি চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন, যা মূলত চিত্তবিনোদন, শিক্ষা এবং গবেষণার উদ্দেশ্যে তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল। এরপর ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এই চিড়িয়াখানা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।প্রথমদিকে একটি টিকিটেই চিড়িয়াখানা এবং ফয়েজ লেকে প্রবেশের সুযোগ ছিল। তবে ১৯৯৫ সালে দর্শকদের সুবিধা এবং আর্থিক মুনাফার কথা বিবেচনা করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ পৃথক গেটে দুইটি আলাদা টিকিটের মাধ্যমে প্রবেশের ব্যবস্থা চালু করে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কোথায় অবস্থিত? লোকেশন ও যাওয়ার ঠিকানা জেনে নেওয়া যাক।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কোথায় অবস্থিত

এই চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৭২ প্রজাতির প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক প্রাণী রয়েছে, যার মধ্যে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৮ প্রজাতির পাখি এবং ৪ প্রজাতির সরীসৃপ অন্তর্ভুক্ত। এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় সিংহ, এশীয় কালো ভালুক, আফ্রিকান জেব্রা, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী রয়েছে। পাখিদের মধ্যে ময়ূর, রাজ ধনেশ, তিতির, কাক ধনেশ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মিনি এভিয়ারিতে ৩৪২টি বিদেশি পাখি রয়েছে। ভবিষ্যতে ক্যাঙ্গারু ও উটপাখি আনার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলায় চিড়িয়াখানাটি অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে পাহাড়তলী ইউএসটিসি মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাহাড়ের পাদদেশে ১০.২ একর ভূমির উপর এটি অবস্থিত।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কিভাবে যাব

চট্টগ্রামের এই চিড়িয়াখানায় যাওয়া খুব সহজে। চট্টগ্রাম শহর থেকে রিক্সা বা সিএনজি দিয়ে সরাসরি চিড়িয়াখানায় যাওয়া যাবে। আর চট্টগ্রামের বাইরে থেকে যেতে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরে নামতে হবে। কেননা ঐ বাস বা যানবাহন গুলো সরাসরি চিড়িয়াখানার রুটে যাবে না। ঢাকা থেকে বা যেকোনো এলাকা থেকে চট্টগ্রামের বাস পাওয়া যায়। সেই বাসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম আসবেন। এরপর চট্টগ্রাম থেকে সিএনজি বা রিক্সা নিয়ে ফয়েজ লেকের বিপরীত পাশে যাবেন। ইউএসটিসি মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাহাড়ের পাদদেশে গেলেই চিড়িয়াখানাটি পাওয়া যাবে।

স্থান অনুযায়ী চিড়িয়াখানায় যেতে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা লাগবে। চট্টগ্রামের বাইরে থেকে চিড়িয়াখানায় গেলে নুন্যতম ৫০০ টাকা খরচ হবে। শুধু বাস নয় ট্রেন বা বিমানের মাধ্যমেও চট্টগ্রামে যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য কয়েকটি ট্রেন ও বিমানের ফ্লাইট আছে। তবে যে যানবাহনেই না কেনো প্রথমে চট্টগ্রাম শহরে নামবেন।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কখন বন্ধ থাকে?

সপ্তাহের ৭ দিন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা খোলা থাকে। তাদের কোনো সাপ্তাহিক বন্ধ নেই। সরকারি ছুটির দিনেও চিড়িয়াখানা খোলা পাওয়া যাবে। বর্তমানে মাসে ৩০ দিনই চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ করতে পারবেন। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কখনও বন্ধ থাকে না।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কি কি আছে?

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের ফয়েজ লেক এলাকায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় চিড়িয়াখানা। এটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, এবং সরীসৃপ রয়েছে, যা দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে।

এই চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। উল্লেখযোগ্য প্রাণীদের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় সিংহ, এশীয় কালো ভালুক, আফ্রিকান জেব্রা, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, সাম্বার হরিণ, এবং গয়াল অন্যতম। এছাড়াও মুখপোড়া হনুমান, উল্লুক, রেসাস বানর, এবং মেছো বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির বানর এবং বিড়াল জাতীয় প্রাণী রয়েছে। এছাড়া এই চিড়িয়াখানায় ৩৮ প্রজাতির পাখি রয়েছে। চিড়িয়াখানায় সরীসৃপদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অজগর, মিঠাপানির কুমির, এবং কচ্ছপ। এই সরীসৃপগুলো দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি করে।

চিড়িয়াখানাটি উন্নত করতে এবং দর্শনার্থীদের আরও আকর্ষণ করতে ভবিষ্যতে ক্যাঙ্গারু ও উটপাখি আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ উদ্যোগগুলো চিড়িয়াখানার বৈচিত্র্য ও মান আরও বৃদ্ধি করবে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রাণী প্রেমী এবং পর্যটকদের জন্য একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। আরও সহজে এখানে  আসার জন্য গুগল ম্যাপ ব্যবহার করবেন। তাহলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কোথায় অবস্থিত লোকেশন সহ জানতে পারবেন।

আরও দেখুনঃ

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রবেশ মূল্য কত টাকা

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সাপ্তাহিক বন্ধ ২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *