বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৮ম শ্রেণি

এখানে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর দেওয়া আছে। এই অধ্যায়ের নাম ঔপনিবেশিক যুগ ও বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম। বাংলায় ইউরোপীয় বণিকদের আগমন ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে হলেও পরে তারা আমাদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেয়। এদের মধ্যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যায়। ১৭৫৭ সালে বাংলা-বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করে তারা ক্ষমতা দখল করে নেয়। বাংলায় ইংরেজদের শাসন চলে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। এভাবে ১৭৫৭ সালের পরে বাংলায় যে শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় সাধারণত আমরা তাকে ঔপনিবেশিক শাসন বলি। আর ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ইংরেজ শাসনামলকে ঔপনিবেশিক যুগ বলি ।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ঃ

সাদিমপুর গ্রামে কোনো কলেজ নেই। গ্রামটি কুসংস্কার ও অজ্ঞতায় জর্জরিত। পরে এলাকার বড়রা মিলে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। কলেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গ্রামের এক মানগণ্য বলেন, ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির শাসন ও শোষণের জন্য ভারতব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়, যার ফলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইন পাস হয়। এর পেছনে কাজ করেছিল এক দল শিক্ষিত ভারতীয়। তাই সবাইকে শিক্ষিত হতে হবে।’

ক) ব্রিটিশ ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?
খ) ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কেন দেখা দেয়?
গ) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাসকৃত আইনের ফলাফল এ দেশের প্রেক্ষাপটে কেমন ছিল, ব্যাখ্যা করো।
ঘ) ইংরেজ শাসকগোষ্ঠীর সময় শিক্ষার প্রসারের আলোকে কি বলা যায় যে, সাদিমপুর গ্রামের কুসংস্কার দূর করা সম্ভব? আলোচনা করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ঃ 

চ্যানেলে প্রচারিত একটি চলচ্চিত্রে চোখ আটকে যায় নিপার। দেখতে পায় এ দেশীয় কিছু জমিদার জোর করে নিরীহ কৃষকদের কাছ থেকে অর্থ ও ফসল আদায় করে ইংরেজদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দেখে সে বুঝতে পারে সিনেমাটি নির্দিষ্ট শাসনব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছে।

ক) ঔপনিবেশিক শাসন কাকে বলে?
খ) দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝায়?}
গ) নিপার দেখা শাসনব্যবস্থাটি কী? সেটা কেন এ দেশে প্রচলিত ছিল, ব্যাখা করো।
ঘ) ওই শাসনব্যবস্থার প্রভাব বাংলায় কতটা সুদূরপ্রসারী ছিল, আলোচনা করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ঃ 

পোরগোলা গ্রামটি শিক্ষাদীক্ষায় অনেক পিছিয়ে। ফলে গ্রামবাসী শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ সব দিক থেকে পশ্চাৎপদ। এ গ্রামেরই এক শিক্ষিত, বিত্তবান ও প্রভাবশালী যুবক রাশেদ। সে গ্রামটিকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। তার প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে এলাকাবাসীর মাধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এলাকাবাসী সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। রাশেদের অবিরত প্রচেষ্টায় গ্রামবাসী নারীশিক্ষা, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে।

ক. কত সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়?
খ.ভাস্কো দা গামা ইতিহাসে বিখ্যাত কেন?
গ.উদ্দীপকে বর্ণিত পরিস্থিতির আলোকে উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় কিসের উদ্ভব হয়েছিল? এ সম্পর্কে তোমার মতামত ব্যক্ত করো।
ঘ.‘রাশেদের মতো উন্নয়নকর্মী ও সংস্কারবাদী ব্যক্তিবর্গের কর্মতৎপরতার ফলেই ভারতের স্বাধীনতার পথ সুগম হয়েছে’ উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  

ক) ব্রিটিশ ভারতের প্রথম ভাইসরয় ছিলেন লর্ড ক্যানিং।

খ) ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের কারণ হলো ইংরেজদের অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ১৭৬৫ সালে বাংলার রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা লাভ করে ইংরেজ শাসকরা। তারা প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য করে। কর পরিশোধের চাপে কৃষকরা প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়। এ ছাড়া ১৭৬৮ সাল থেকে টানা তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে ঠিকমতো ফসল উৎপাদনও হয়নি। যেটুকু ফসল উৎপাদন হতো তা আবার শাসকগোষ্ঠী কর হিসেবে নিয়ে নিত। এর ফলেই ছিয়াত্তরের মন্বন্তর তথা মহাদুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত আইনটি হলো ১৮৫৮ সালের ২ আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ভারত শাসন আইন। ভারত শাসন আইন জারির ফলে ভারতে ইস্ট-ইন্ডিয়া কম্পানির শাসনের চূড়ান্ত অবসান ঘটে। ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতা ব্রিটিশ রানির হাতে চলে যায়। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা একজন মন্ত্রীকে ভারত সচিব পদে মনোনীত করে। তিনি ১৫ সদস্যের পরামর্শক কাউন্সিলের মাধ্যমে ভারত শাসনের ব্যবস্থা করেন। এই আইন অনুসারে গভর্নর জেনারেলকে ভাইসরয় নামে অভিহিত করা হয়। এভাবেই ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

ঘ) শিক্ষার প্রসারের ফলে একটি এলাকার কুসংস্কার দূর করা সম্ভব। উদ্দীপকে গ্রামের সবাই মিলে কলেজ স্থাপন করে, যা পরে ওই এলাকার আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। ইতিহাস থেকে আমরা দেখি ইংরেজ শাসকগোষ্ঠী উপমহাদেশে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিল। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৭৮১ সালে কলকাতা মাদরাসা ও ১৭৯১ সালে সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এ ছাড়া রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো সমাজসংস্কারকরা প্রচলিত কুপ্রথা দূর করতে ভূমিকা রাখেন। তাঁদের উদ্যোগ এবং ইংরেজ শাসকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হিন্দুসমাজ থেকে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ হয়, বাল্যবিয়ে বন্ধ হয় এবং বিধবা বিয়ের চলন ঘটে। এ ছাড়া তাঁদের নানা রকম কর্মসূচি ও শিক্ষার বিস্তার উপমহাদেশে নবজাগরণের সূচনা করে। এর পরিপেক্ষিতে বলা যায়, শিক্ষার মাধ্যমে বাংলার জনগণ ক্রমে অধিকার-সচেতন হয়ে ওঠে। একইভাবে সাদিমপুর এলাকায় কলেজের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটলে এলাকার কুসংস্কার দূর করতে এবং নাগরিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে ভূমিকা রাখবে।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  

ক) নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধনসম্পদ নিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে বিদেশি কোনো শক্তি যদি কোনো দেশ দখল করে সেখানে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে তবে তাকে ঔপনিবেশিক শাসন বলে।

খ) দ্বৈতশাসন বলতে লর্ড ক্লাইভ প্রবর্তিত ইংরেজ কম্পানি ও দেশীয় নবাবের সমন্বিত শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়। দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের কাছ থেকে দেওয়ানি লাভের পর বাংলার নবাবদের বৃত্তিভোগীতে পরিণত করে ক্লাইভ দ্বৈতশাসন প্রবর্তন করেন।এই শাসনব্যবস্থায় বাংলার নবাব শুধু শাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব পান এবং রাজস্ব আদায় ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করে কম্পানি। ফলে নবাব পান ক্ষমতাহীন দায়িত্ব আর কম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা।

গ) সিনেমার দৃশ্যটি মূলত ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার বাস্তবতা তুলে ধরেছে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মাধ্যমে বাংলায় ঔপনিবেশিক শাসনের শুরু।

এই কাজে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নবাবের আত্মীয়-স্বজন, সভাসদ ও ক্ষমতালোভী ভারতীয় বণিক শ্রেণি। তাদের ষড়যন্ত্র এবং বাংলার শাসকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছিল বাংলায় ঔপনিবেশিক শক্তির বিজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ।
বহিরাগতের শাসন, অর্থপাচার, অর্থনৈতিক শোষণ বাংলার সাধারণ মানুষের জীবনকে থামিয়ে দিয়েছিল। ফলে ক্ষমতা দখলের জন্য ইংরেজদের পরিকল্পনা প্রতিরোধ করার মতো রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক কোনো প্রকার শক্তিই দেশে ছিল না। নিজস্ব জমিদারি থাকার পরও সব রাজাকে বিদেশিদের ভূমি রাজস্ব কর দিতে হতো, যার ফলে দীর্ঘদিন বিদেশি শাসনব্যবস্থা এ দেশে প্রচলিত ছিল।

ঘ)

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের ফলে ভারত উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার ফল ছিল সুদূরপ্রসারী। পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত নবাবকে আটক ও নির্মমভাবে হত্যার পর ইংরেজরা মীরজাফরকে নবাব বানালেও মূল ক্ষমতা চলে যায় ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের হাতে। পরে ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা দিল্লির সম্রাটের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা-বিহার-ওড়িশার রাজত্ব লাভ করে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। তারা নবাবকে ক্ষমতাহীন দায়িত্ব প্রদান করে সিংহাসনে বসিয়ে রাখে, অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব হাতে রাখে ইংরেজরা।

ইংরেজরা প্রজাদের অতিরিক্ত কর দেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ করতে থাকে। অতিরিক্ত করের চাপ আর অনাবৃষ্টির ফলে ১১৭৬ সনে বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তবে পাশাপাশি ইংরেজদের অল্প কিছু ভালো উদ্যোগও ছিল। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন ও পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের কাজও তারা করেছে। এসব কারণে বলা যায়, পলাশীর যুদ্ধের ফলে বাংলায় ঔপনিবেশিক শাসনের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  

ক. ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।

খ.পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালে ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার করেন। আর এ জলপথ আবিষ্কারের ফলে ভারতবর্ষের সাথে ইউরোপের সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ভারতবর্ষ এর ফলে বিশ্ববাণিজ্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। ভাস্কো দা গামা এ কারণে ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন।

গ.

উদ্দীপকে রাশেদ তার গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একজন শিক্ষিত, বিত্তবান ও প্রভাবশালী সমাজ সংস্কারক হিসেবে গ্রামবাসীর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে। তাদের সচেতন নাগরিক হিসেবে সে গড়ে তুলেছে। তাদের দায়িত্ব সচেতন করেছে। নারীশিক্ষা, মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার এসব গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে গ্রামবাসীকে সচেতন করেছে। ঠিক তেমনি উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণের উদ্ভব ঘটেছিল। রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজদের সহযোগিতায় সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। ইংরেজদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সারা দেশজুড়ে স্কুল ও কলেজের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে নতুন চিন্তা-চেতনার উন্মেষ ঘটে। বহুকালের প্রচলিত বিশ্বাস, নানা সংস্কার, বিধান সম্পর্কে তাদের মনে সংশয় ও প্রশ্ন জাগতে লাগল। হিন্দু সমাজ থেকেই সতীদাহের মতো প্রথার বিরুদ্ধে রীতিমতো আন্দোলন শুরু হলো। বিধবা বিবাহের পক্ষে জনমত তৈরি হলো। উনবিংশ শতাব্দীতে আধুনিক শিক্ষা ও জাগরণের ফলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে।

ঘ.

‘রাশেদের মতো উন্নয়নকর্মী ও সংস্কারবাদী ব্যক্তিবর্গের কর্মতৎপরতার ফলেই ভারতের স্বাধীনতার পথ সুগম হয়েছে’ উদ্দীপকের এ উক্তিটির বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই রাশেদ যেমন গ্রামবাসীকে নারীশিক্ষা, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার ইত্যাদি মৌলিক বিষয়ে সচেতন করে। তৎকালীন সময়ে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখ সংস্কারপন্থী ব্যক্তিবর্গের অগ্রণী ভূমিকায় সারা ভারতবাসী জেগে ওঠে। ইংরেজদের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ইংরেজদের আধুনিক শিক্ষার সংস্পর্শে এসে স্থানীয় মানুষের মধ্যে নতুন চেতনার উন্মেষ ঘটে। সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। বিধবা বিবাহের পক্ষে মত তৈরি হয়। মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপন ও সংবাদপত্র প্রকাশের মাধ্যমে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা হয়।

ফলে তারা সমাজের অনাচার নিয়ে যেমন তারা আত্মসমালোচনা করেছেন, তেমনি শাসকদের অবিচারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন। এরই ফলে সমাজের সংবেদনশীল মানুষের নজর যায় সমাজের দিকে। ডিরোজিও, বিদ্যাসাগর প্রমুখ অবাধে মুক্ত মনে জ্ঞানচর্চার ধারা তৈরি করেন।
বাঙালির এই নবজাগরণ কলকাতা মহানগরীতে ঘটলেও এর পরোক্ষ প্রভাব সারা বাংলাতেই পড়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর এই নবজাগরণ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে।

সেই সাথে এর ফলে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকার বোধের উন্মেষ ঘটতে থাকে। সামগ্রিকভাবে বাংলায় দেশপ্রেম ও রাজনৈতিক চেতনার জোয়ার আসে। এরই ধারাবাহিকতায় দেখা দেয় বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন। এ সময় অনেক তরুণ সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। মুসলমানদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বতন্ত্র দল মুসলিম লীগ। স্বরাজ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ বিভিন্ন নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটে। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়ে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই রকম আরও পোস্ট পেতে আমার সাথেই থাকুন।

আরও দেখুনঃ

ঔপনিবেশিক যুগ ও বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম- ৮ম শ্রেণি ২০২৩

2 thoughts on “বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৮ম শ্রেণি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *