বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যান, যা পূর্বে বেলস পার্ক নামে পরিচিত ছিল। ১৮৯৬ সালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এন.ডি. বিটসন বেলস বরিশালে দায়িত্ব নেওয়ার পর, ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জের আগমনের স্মরণে কীর্তনখোলা নদীর তীরে এই পার্কটি নির্মিত হয়। বরিশাল শহরের উন্নয়ন, শিক্ষা এবং জনস্বাস্থ্য খাতে বিটসন বেলসের অসামান্য অবদানের সম্মানস্বরূপ পার্কটির নাম রাখা হয়েছিল বেলস পার্ক। এখানে ভ্রমণ করার পূর্বে বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক সম্পর্কে জেনে নিন।
বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক
বরিশালের অন্যতম ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত বঙ্গবন্ধু উদ্যান, যা পূর্বে বেলস পার্ক নামে পরিচিত ছিল, শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৮৯৬ সালে এন.ডি. বিটসন বেলস যখন বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন তিনি শহরের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে কীর্তনখোলা নদীর তীরে এই উদ্যানটি নির্মাণ করা হয়, যা ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জের আগমনের স্মরণে গড়ে উঠেছিল।
বেলস তার শাসনামলে বরিশালে মুসলিম শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য এবং শহরের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, আর তার এই অবদানের জন্যই পার্কটির নাম বেলস পার্ক রাখা হয়। এই উদ্যানটি বরাবরই রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনীতিবিদ এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই পার্কে সমাবেশ করেছেন এবং মূল্যবান ভাষণ দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক কোথায়
বঙ্গবন্ধু উদ্যান, যা পূর্বে বেলস পার্ক নামে পরিচিত ছিল, বরিশাল শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এই পার্ক টি বরিশাল শহরের প্রধান এলাকা থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থান, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়। দ্যানটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
এখানে যাওয়ার জন্য আপনি বরিশাল শহরের প্রধান সড়কগুলোর মাধ্যমে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন, এবং স্থানীয় রিকশা বা অটো রিকশা ব্যবহার করে দ্রুতভাবে উদ্যানটির কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্কে কি কি আছে?
বঙ্গবন্ধু উদ্যান (পূর্বে বেলস পার্ক) একাধিক আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে উঠেছে, যা এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করে তুলেছে। এই পার্কে বিনোদনের জন্য তেমন কিছু নেই। পার্কটি শিশুদের জন্য বিসেসব ভাবে তৈরি করা হয়নি। তবে এখানে যা যা আছে সেগুলো জেনে ভ্রমণ করতে আসতে হবে।
- মুক্তমঞ্চ (Open Air Stage): উদ্যানের একটি প্রধান আকর্ষণ হলো মুক্তমঞ্চ, যা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, সঙ্গীত পরিবেশন এবং রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ম্যুরাল (Mural): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে উদ্যানের মধ্যে একটি স্মরণীয় ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। এটি বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো চিত্রিত করে এবং জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে কাজ করে।
- বাগান ও হাঁটার পথ (Gardens and Walkways): উদ্যানটিতে সুসজ্জিত বাগান, ফুলের বাগান এবং হাঁটার পথ রয়েছে, যা দর্শনার্থীদের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ প্রদান করে।
- প্রবেশ দ্বার ও নকশা (Entrance and Design): উদ্যানের প্রবেশ দ্বার ও নকশা একে একটি আকর্ষণীয় স্থান করে তুলেছে। এটি উদ্যানটির ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
- স্মৃতিস্তম্ভ (Monuments): বঙ্গবন্ধু উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে কিছু স্মৃতিস্তম্ভ ও ঐতিহাসিক চিহ্ন রয়েছে, যা পার্কটির ঐতিহাসিক গুরুত্বকে তুলে ধরে।
- বিশ্রামাগার ও বসার ব্যবস্থা (Rest Areas and Seating): উদ্যানটিতে দর্শনার্থীদের জন্য বসার ব্যবস্থা এবং বিশ্রামের স্থান রয়েছে, যেখানে মানুষ আরাম করতে ও পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
- গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম (Educational Activities): মাঝে মাঝে উদ্যানটিতে শিক্ষামূলক ও গবেষণামূলক কার্যক্রম, মেলা এবং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এই বঙ্গবন্ধু উদ্যান, যা পূর্বে বেলস পার্ক নামে পরিচিত ছিল, বরিশালের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের একটি চমৎকার নিদর্শন। এই উদ্যানটি শুধু একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান নয়, বরং এটি শহরের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জাতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। এই পার্কটি বিনোদনের জন্য নয়, এর ঐতিহ্য ও মনোরম পরিবেশের জন্য পরিচিত।
আরও দেখুনঃ
তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্ক
আমি সুজন। আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা পলিটেকনিকে পড়ালেখা করছি। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।