সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর। বাংলা ১ম পত্র

এখান থেকে সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পড়তে পারবেন। তার মনে শান্তি নেই। চিকিৎসক বলেছেন, কোনাে সুখী মানুষের জামা গায়ে দিলেই শুধু মােড়লের অসুস্থতা কেটে যাবে। কিন্তু পাঁচ গ্রাম খুজেও একজন সুখী মানুষ পাওয়া গেল না। অবশেষে একজনকে পাওয়া গেল , যে নিজের শ্রমে উপার্জিত আয় দিয়ে কোনােভাবে জীবিকা নির্বাহ করে সুখে দিনাতিপাত করছে।

সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে কয়েক টি সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। এই প্রশ্ন গুলো মূল বইয়ে দেওয়া নেই। গাইড বই থেকে পড়তে হবে। যাদের কাছে গাইড নেই তারা এই পোস্টে দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো পড়ুন।

সৃজনশীল ১ঃ 

করিমের বেতন তেমন কিছু নয়। নিজের শ্রমের টাকায় যেদিন খাদ্য কিনতে পারে সেদিন খায়, যেদিন পারে না, না খেয়ে থাকে। তবুও সে নিজেকে সুখী মনে করে। কারণ সে বিশ্বাস করে, সম্পদের মধ্যে সুখ নিহিত থাকে না।

ক. মােড়ল কার মুরগি জোর করে জবাই করে খেয়েছে?
খ. সবাই অসুখী কারও সুখ নেই’- ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় কেন এ কথা বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের করিম সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন চরিত্রের প্রতিচ্ছবি ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের করিমের বিশ্বাসের বিষয়টি ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার আলােকে বিশ্লেষণ করাে।

সৃজনশীল ২ঃ 

আলিপুর গ্রামে সুদের কারবারি করেন রফিক মিয়া। তার বাড়িতে দু’তিনজন সশস্ত্র পাহারাদার। তবুও তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। অতিরিক্ত মানসিক চাপে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ক. ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় দৃশ্য সংখ্যা কয়টি?
খ. অন্যের মনে দুঃখ দিলে কোনােদিন সুখ পাবে না’— কে, কেন এ কথা বলেছে?
গ. উদ্দীপকের রফিক মিয়া সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. সম্পদ নয়, মানসিক প্রশান্তিই সুখের প্রধান নিয়ামক’ – উদ্দীপক ও সুখী মানুষ’ নাটিকার আলােকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে।

সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

এখানে উপরের দেওয়া সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো দেওয়া হয়েছে। যারা নিজে উত্তর গুলো বের করতে পারবেন না, এই অংশ থেকে উত্তর সংগ্রহ করুন।

উত্তর ১ঃ 

ক। মােড়ল হাসুর মুরগি জোর করে জবাই করে খেয়েছে।

খ। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মানুষের অন্তহীন চাহিদার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।মানুষের চাহিদার শেষ নেই। যার সব কিছু আছে সেও আরও বেশি কিছু পেতে চায়। মানুষের মাঝে পরিতৃপ্তিবােধ না থাকায় মানুষ সুখী হতে পারে না। আলােচ্য উক্তিটিতে মানুষের সাধ্যের বাইরে চাহিদা পূরণের জন্য মনে যে অশান্তির সৃষ্টি হয় সেই বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।

গ।

উদ্দীপকের করিম সুখী মানুষ’ নাটিকার সুখী মানুষ চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।

যার সম্পদের পরিমাণ যত কম, পৃথিবীতে সে মানুষ হিসেবে তত বেশি সুখী। অনৈতিক পথে অঢেল সম্পদের মালিক হলেও প্রকৃত সুখের নাগাল পাওয়া যায় না।

উদ্দীপকের করিম চরিত্রটির সম্পদ বলতে তেমন কিছুই নেই। নিজের শ্রমে উপার্জনের টাকা দিয়ে খাদ্য কিনতে পারলে খায়, যেদিন পারে না সেদিন না খেয়েই থাকে। অর্থাভাব থাকলেও সে নিজেকে সুখী মনে করে। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকাটিতে এরকমই একটি চরিত্র। সুখী মানুষ সারাদিন বনে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে যা পায় তা দিয়েই সে চাল, ডাল কিনে রান্না করে খায়। খেয়েদেয়ে মনের সুখে গান গাইতে গাইতেই ঘুমিয়ে পড়ে। যেহেতু তার কোনাে সম্পদ নেই। তাই চোরের ভয়ও নেই। সে নিজেকে একজন সুখী মানুষ মনে করে।

তাই বলা যায়, উদ্দীপকের করিম চাহিদার স্বল্পতার দিক দিয়ে আলােচ্য নাটিকার সুখী মানুষ চরিত্রের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।

ঘ।

সুখী মানুষ’ নাটিকাটিতে সম্পদকেই অশান্তির মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

যারা দিন আনে দিন খায় তাদের অধিক সম্পদ উপার্জনের কোনাে আকাঙ্ক্ষা থাকে না। তাই সম্পদ হ হারানাের কোনাে চিন্তাও তাদের করতে হয় না। তারাই মূলত প্রকৃত সুখের নাগাল পায়। তাদের জীবন হয় চিন্তামুক্ত, নিঝঞাট ও শান্তিপূর্ণ ।

উদ্দীপকের করিমও দিন আনে দিন খায়। উচ্চাকাঙ্ক্ষা না থাকার কারণে তার কোনাে অশান্তিও নেই। সে বিশ্বাস করে সম্পদের মধ্যে প্রকৃত সুখ নিহিত থাকে না। সুখী মানুষ’ নাটিকাটিতেও একজন সুখী মানুষকে নাট্যকার উপস্থাপন করেছেন, যার কোনাে অর্থ-সম্পদ নেই। সেও দিন আনে দিন খায়। এ কারণেই সে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করে। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় নাট্যকার একজন সুখী মানুষ চরিত্রের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্যকে স্পষ্ট করে তুলেছেন। মােড়লের সুস্থতার জন্য তিনি একজন সুখী মানুষের জামার প্রয়ােজনীয়তা দেখিয়েছেন।

যখন একজন সুখী মানুষকে তিনি পাঠকের সামনে হাজির করলেন তখন দেখা গেল সে মানুষটির কোনাে সম্পদ নেই। এমনকি গায়ে দেওয়ার মতাে জামাও নেই। কাঠ কেটে নিজের শ্রমে উপার্জিত অর্থ দিয়ে কোনােরকমে সে দিনাতিপাত করে। কোনাে সম্পদ না থাকার কারণে তার চুরি হওয়ারও ভয় নেই। তাই শান্তিতে ঘুমানাের ব্যাপারেও তার কোনাে দুশ্চিন্তা নেই। অর্থাৎ নাট্যকার মনে করেন সম্পদই অশান্তির মূল কারণ।উদ্দীপকের করিমও একই বিশ্বাসে বিশ্বাসী একজন মানুষ। সেও মনে করে কেবল সম্পদের মাঝেই সুখ খুঁজে পাওয়া যায় না।

উত্তর ২ঃ

ক। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় দৃশ্য সংখ্যা দুইটি।

খ। মােড়ল অন্যকে কষ্ট দিত এবং অন্যের কষ্টে হাসত বলে হাসু মােড়লকে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছিল।মােড়ল সবসময় অপরকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করেছে। সবাইকে অত্যাচার করত সে, এমনকি হাসুর মুরগিও জবাই করে খেয়েছে সে। তাই যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় যখন সে নিজের জন্য সুখ প্রার্থনা করছিল, তখন হাসু একথা বলেছিল।

গ।

সুখী না হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের রফিক মিয়া সুখী মানুষ’ নাটিকার মােড়ল চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।

নৈতিক আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হলেও প্রকৃত সুখ লাভ করা যায় না। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় এই সত্যটিই প্রকাশিত হয়েছে। এখানে মােড়লকে একজন লােভী ও স্বার্থপর মানুষ হিসেবে দেখানাে হয়েছে। সম্পদশালী হওয়াই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু বিপুল পরিমাণ সম্পদ তাকে সুখী করতে পারেনি। উদ্দীপকের রফিক মিয়ার মধ্যেও আমরা এ দিকটি লক্ষ করি।

উদ্দীপকের রফিক মিয়া ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার মােড়লের মতােই একজন লােভী মানুষ। মানুষ ঠকিয়ে, সুদের কারবারি করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কিন্তু তার মনে শান্তি নেই। তিনি সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকেন। দুই-তিনজন সশস্ত্র পাহারা দিয়েও তিনি ঘুমাতে পারেন না। সম্পদই তার জীবনে চরম অশান্তি ডেকে এনেছে। আলােচ্য নাটিকার মােড়লও একই অবস্থার শিকার। সে বিবেচনায় উদ্দীপকের রফিক মিয়া সুখী মানুষ’ নাটিকার মােড়ল চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ।

সম্পদ নয়, মানসিক প্রশান্তিই সুখের প্রধান নিয়ামক উদ্দীপক ও ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার আলােকে উক্তিটি যথার্থ ।

সম্পদ মানুষকে সুখী করতে পারে না বরং অতিরিক্ত সম্পদ অনেক সময় অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুখী মানুষ’ নাটিকায় মােড়ল চরিত্রের মাধ্যমে নাট্যকার এ বিষয়টিকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন। এখানে সে অবৈধ পথে প্রচুর সম্পদের মালিক হলেও সুখী হতে পারেনি। উদ্দীপকের রফিক মিয়ার মধ্যেও এ দিকটি লক্ষ করা যায়।

উদ্দীপকের রফিক মিয়া অসৎ পথে সুদের কারবারি করে, মানুষ ঠকিয়ে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছে। কিন্তু এই সম্পদই তাকে অসুখী করে তুলেছে। কেননা, যে সুখের আসায় তিনি সম্পদ গড়ে তুলেছেন, সেই সম্পদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তিনি ঘুমাতে পারেন না। দুই তিনজন সশস্ত্র পাহারাদার রেখেও তিনি সমস্যা দূর করতে পারছেন না।

উদ্দীপক ও সুখী মানুষ’ নাটিকার আলােচনায় এ কথা স্পষ্ট হয় যে, সম্পদ মানুষকে সুখী করতে পারে না। অর্থ-সম্পদের মাঝে সুখ খুঁজে না পেয়ে উদ্দীপকের রফিক মিয়া ও আলােচ্য নাটিকায় মােড়ল মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মানুষকে ঠকিয়ে সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলেই শেষ পর্যন্ত তারা সুখের নাগাল পাননি। এক্ষেত্রে তারা সম্পদের পরিবর্তে মানসিক তৃপ্তির লক্ষ্যে মহৎ কাজে আত্মনিয়ােগ করলে প্রকৃত সুখী হতে পারতেন। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ ।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট আপনাদের ভালোলেগেছে এবং এখান থেকে সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সংগ্রহ পেরেছেন। এই রকম শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পেতে আমার সাথেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করা হয়।

আরও দেখুনঃ

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

তৈলচিত্রের ভূত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর। পিডিএফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *