প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল প্রশ্ন এইচ এস সি ২০২৩

এইচ এস সি জীব বিজ্ঞান ২য় পত্রের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেওয়া হয়েছে। এই সিলেবাস অনুযায়ী ২০২৩ সালের এইচ এস সি পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস এই অধ্যায় টি রয়েছে। অনেকে অনেকে জীব বিজ্ঞান ২য় পত্রের ১ম অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন সাজেশন খুজতেছেন। এই পোস্টে কয়েক টি সৃজনশীল ও উত্তর দেওয়া আছে। যারা অতিরিক্ত প্রশ্ন পড়তে চান, তারা সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন।

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল প্রশ্ন

এখানে গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেওয়া আছে। এই ধরনের প্রশ্ন এইচ এস সি পরীক্ষায় দেওয়া থাকে। নিচে থেকে সকল বোর্ডের সৃজনশীল গুলো দেখেনিন।

সৃজনশীল ১ঃ 

প্রাণিজগতে প্রানীদের শনাক্তকরণে সিলোম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তাছাড়া প্রতিসাম্যতাও প্রাণী শনাক্তকরণে জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন প্রাণীতে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের প্রতিসাম্যতা পরিলক্ষিত হয়। [বরিশাল বোর্ড ২০২১]

ক) ক্লিভেজ কি?
খ ) হিমোসিল বলতে কি বুঝ?
গ) উদ্দীপকের প্রথোমাংশের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে প্রাণী জগতের শ্রেণী বিন্যাস কর।
ঘ) উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি বিশ্লেষন কর।

সৃজনশীল ২ঃ 

প্রবাল দ্বীপ আমাদের পরিচিত, এই দ্বীপটি তৈরি করে নির্দিষ্ট পর্বের সদস্য। আবার সিলােমের ভিত্তিতেও প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। [চট্টগ্রাম বোর্ড ও সিলেট বোর্ড ২০২১]

ক. স্পঞ্জোসিল কী?
খ. কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে কেন মেরুদণ্ডী বলা হয়?
গ. প্রবাল তৈরিকারী প্রাণী পর্বের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি বিশ্লেষণ করাে।

সৃজনশীল ৩ঃ 

হানিফ স্যার জীববিজ্ঞান গবেষণাগারে সংরক্ষিত কতগুলি প্রাণী যথা- ফিতাকৃমি, গােলকৃমি, চিংড়ি ও ইলিশ মাছ ছাত্রদের দেখিয়ে এগুলাের শ্রেণিবিন্যাস ব্যাখ্যা করলেন। [ঢাকা বোর্ড ২০২১]

ক. শ্রেণিবিন্যাস কী?
খ. প্রজাতি বৈচিত্র্য বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তৃতীয় প্রাণীটির পর্বের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লেখাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণীটি অন্যান্য প্রাণী অপেক্ষা উন্নত-ব্যাখ্যা করাে।

সৃজনশীল ৪ঃ

করিম পুকুরে জাল ফেললে তার জালে মাছ ছাড়াও শামুক ও ব্যাঙ ধরা পড়লাে । [রাজশাহী বোর্ড ২০১৯]

ক) প্রজাতি কী?
খ) দ্বিপদ নামকরণ বলতে কি বুঝ?
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীগুলাের মধ্যে অপ্রতিসম প্রাণীটির পর্বভিত্তিক বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ কর।
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীগুলাের মধ্যে কোন কোনটি একই পর্বের হলেও শ্রেণিগতভাবে ভিন্ন ? বিশ্লেষণ কর ।

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক যৌন জননকারী প্রাণীর জাইগােটের বহু বিভাজনই হলাে ক্লিভেজ।

খ.ভূণীয় বিকাশের সময় প্রকৃত সিলােমের প্রাচীর ফেটে গিয়ে ব্লাস্টোসিলের সাথে একাকার হয়ে যায় এবং পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে ঐ সংযুক্ত গহ্বর পেরিটোনিয়াম নামক পর্দায় আবৃত থাকে না। এরকম সিলােমকে হিমােসিল বলে। এটি রক্তপূর্ণ থাকে তাই রক্তপূর্ণ দেহগহ্বরকে হিমােসিল বলে। ঘাসফড়িং এর হিমােসিল দুটি অণুপ্রস্থ পর্দা দিয়ে তিনটি প্রকোষ্ঠ বা সাইনাসে বিভক্ত। হিমােসিল দেহের বিভিন্ন অঙ্গ, রক্ত ও লসিকা ধারণ করে। এর মাধ্যমে খাদ্যরস ও বর্জ্য বস্তু পরিবাহিত হয়।

(গ)

উদ্দীপকে প্রাণীদের শনাক্তকরণে প্রথমােক্ত বৈশিষ্ট্য হলাে সিলােম। নিম্নে সিলােমের ওপর ভিত্তি করে প্রাণীদের শ্রেণিবিন্যাস প্রদান করা হলাে-

১. অ্যাসিলােমেট : এদের দেহে সিলােম থাকে না। দেহগহ্বর মেসেনকাইম ও পেশি দ্বারা পূর্ণ থাকে। যেমন- ফিতাকৃমি ।
২. স্যুডােসিলােমট : এসব প্রাণীর দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে না। দেহগহ্বরের চারিদিকে পেশিস্তর বিদ্যমান। যেমন— গােলকৃমি ।
৩. ইউসিলােমেট : এরা প্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী কারণ এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল এপিথেলিয়াল কোষে। গঠিত পেরিটোনিয়াম স্তরে সম্পূর্ণ বেষ্টিত থাকে। যেমন- রুইমাছ।

ঘ)

উদ্দীপকে বিভিন্ন প্রাণীতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিসাম্যতা দেখা যায় । বিভিন্ন প্রাণীর ওপর ভিত্তি করে প্রতিসাম্যতার প্রকারভেদ নিম্নরূপ –
প্রতিসাম্যতা : অক্ষের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাণিদেহের বিভিন্ন অংশে সুষম বণ্টনকে প্রতিসাম্য বলে ।
দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর লম্বালম্বিভাবে কেবল একবার দুটি সমান অংশে ভাগ করা যায় তখন তাকে দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Arthropoda, Chordata.
অরীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর যেকোনাে তলে সমান অংশে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে অরীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Cnidaria ও Ctenophora.
দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে উহার মৌখিক ও এর।বিপরীত অক্ষ বরাবর দুটি তলে সমানভাবে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Ctenophora ও Anthozoa.

গােলীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে গােলাকার জীবদেহকে উহার কেন্দ্র বরাবর যে কোনাে তলে সমান ও সদৃশ অংশে ভাগ করা যায় তাকে গােলীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Volvox।
অপ্রতিসাম্য ; যখন কোনাে প্রাণিদেহকে উহার কেন্দ্রীয় অক্ষ বা অন্য কোনাে তলে সমানভাবে বিভক্ত করা যায় না তখন তাকে অপ্রতিসাম্য বলে । যেমন : Pila globasa.

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক) দেহের অভ্যন্তরে কোয়ানোসাইট কোষ দ্বারা আবৃত স্পঞ্জোসিল (Spongocoel) নামক প্রশস্ত গহ্বর বর্তমান যা অসক্যুলাম (Osculum) নামক বড় আকারের ছিদ্রের মাধ্যমে বাহিরে উন্মুক্ত।

ক) গণ, প্রজাতি ও উপপ্রজাতি এই তিনটি পদের সমন্বয়ে গঠিত নামই হলাে ত্রিপদ নামকরণ।

(খ) কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলা হয় কারণ কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত Vertebrata উপপর্বের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলা হয়। বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১: নটোকর্ড কোমলাস্থি বা অস্থি নির্মিত মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
২- পৃষ্ঠীয় স্নায়ুরজ্জর সম্মুখপ্রান্ত রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্ক গঠন করে এবং বাকি অংশ সুষুম্নাকাণ্ডে পরিণত হয়। কঙ্কাল সম্মুখপ্রান্তে পরিবর্তিত হয়ে করােটি গঠনের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে।

গ)

উদ্দীপকের প্রবাল তৈরিকারী প্রাণীর পর্ব হলাে Porifera. নিচে প্রাণী পর্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা করা হলাে-

১. দেহপ্রাচীর Ostia (অস্টিয়া) নামক অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত।
২. সরলতম বহুকোষী প্রাণী।
৩. দেহে সুগঠিত কলা, অঙ্গ বা তন্ত্র অনুপস্থিত।
৪. দেহে বিশেষ ধরনের নালিতন্ত্র উপস্থিত যার সাহায্যে অভ্যন্তরীণ পরিবহন ঘটে।
৫. অন্তঃকঙ্কাল CaCO2 বা সিলিকা নির্মিত স্পিকিউল বা এক ধরনের ফাইব্রাস প্রােটিনে তৈরি স্পঞ্জিন অথবা উভয়ের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ অবস্খায় নিশ্চল অর্থাৎ কোনাে বস্তুর সাথে স্থায়ীভাবে যুক্ত থাকে।

ঘ)

উদ্দীপকের শেষ বাক্য হিসেবে সিলােম নির্দেশ করা হয়েছে। সিলোম প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কেননা সিলােমের উপস্থিতি, অনুপস্থিতি ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে প্রাণীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিচে প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে সিলােমের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলাে-

১. সিলােমবিহীন প্রাণী : এদের সিলােম থাকে না। দেহগহ্বর মেসেনকাইম ও পেশি দ্বারা পূর্ণ থাকে। উদাহরণ- Porifera, Cnidaria, Platyhelminthes পর্বের প্রাণী ।
২. অপ্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী : এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা সুস্পষ্টভাবে আবৃত থাকে না। দেহ গহ্বরের চারদিকে পেশিস্তর বিদ্যমান। থাকে। উদাহরণ- Nematoda,Acanthocephala, Rotifera, Entroprocta পর্বের প্রাণী।
৩. প্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী ; এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে। এক্ষেত্রে দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালি সংলগ্ন আবরণীকে যথাক্রমে প্যারাইটাল ও ভিসেরাল আবরণী বলে। উদাহরণ- Mollusca, Annelida, Echinodermata ও Chordata পর্বের প্রাণী।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর 

ক) আকৃতিগত ও প্রকৃতিগত পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট রীতি অনুযায়ী প্রাণীদের Kingdom, Phylum, Class, Order, Family, Genus এবং Species দলভুক্ত করার পদ্ধতিই হলাে শ্রেণিবিন্যাস।

খ বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও অঞ্চলে একসঙ্গে বসবাস করে তাকে প্রজাতি বৈচিত্র্য বলে। জীববৈচিত্র্যের মৌলিক ধাপ হলাে প্রজাতি বৈচিত্র্য। ভাইরাসসহ পৃথিবীর সকল প্রজাতির জীব এই প্রজাতি বৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রজাতি বৈচিত্র্য বেশি হলে সে অঞলকে জীববৈচিত্র্যের হট স্পট বলে।

গ) উদ্দীপকের তৃতীয় প্রাণীটি হলো চিংড়ি । এটি Arthropoda পর্বের অন্তর্ভুক্ত। এর শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যগুলাে নিম্নরূপ-

১. দেহ দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম, সন্ধিযুক্ত উপাংগ বিশিষ্ট।
২. মস্তকে এক বা দুই জোড়া অ্যান্টেনা বিদ্যমান।
৩. বহিঃকঙ্কাল কাইটিনময় ও নিয়মিত মােচিত হয় ।
৪, পৌষ্টিকতন্ত্র সম্পূর্ণ ও রক্ত সংবহনতন্ত্র উন্মুক্ত।
৫. রেচন অঙ্গ মালপিজিয়ান নালিকা ।
৬. অন্তঃনিষেক সম্পন্ন হয় এবং রূপান্তর ঘটে ।

(ঘ)

উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণীটি হলাে ইলিশ মাছ যা Chordata পর্বের প্রাণী। আর অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে ফিতাকৃমি, গােলকৃমি ও চিংড়ি হলাে Non-Chordata পর্বের। তাই Chordata পর্বের ইলিশ মাছ Non- Chordata পর্বের প্রাণীগুলাে অপেক্ষা উন্নত কারণ-
১. Chordates দের নটোকর্ড থাকে, কিন্তু Non-Chordates-এদের নটোকর্ড থাকে না।
২. কোনাে কোনাে Chordates-দের নটোকর্ড মেরুদণ্ডে এবং স্নায়ুরজ্জু সুষুম্নাকাণ্ডে পরিণত হয়। Non-Chordate-এ এরূপ হয় না ।
৩. Chordate এর গলবিলীয় ফুলকা ও এন্ডােস্টাইল থাকে কিন্তু Non-Chordates দের থাকে না।
৪. Chordates-দের রক্ত সংবহনতন্ত্র উন্নত ধরনের কিন্তু Non- Chordates-দের রক্ত সংবহনতন্ত্র থাকলেও অনুন্নত ধরনের।
৫. Chordates-দের হৃৎপিণ্ড উন্নত ধরনের এবং অঙ্কীয়দেশে অবস্থান করে। Non-Chordates-দের হৃৎপিণ্ড থাকলেও তা পৃষ্ঠদেশে অবস্থান করে এবং অনুন্নত প্রকৃতির।
৬. শ্রেণিবিন্যাসের ধারাবাহিকতায় দেখা যায় যে, যে সকল পর্ব নিচের দিকে অবস্থান করে তারা উন্নত ধরনের, আর যে সকল পর্ব উপরের দিকে সে সকল পর্ব অনুন্নত ধরনের।
অতএব, উপরােক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইলিশ মাছ Chordata পর্বের তাই Non-Chordata পর্বের প্রাণী ফিতাকৃমি, গােলকৃমি ও চিংড়ি অপেক্ষা উন্নত।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  

ক শ্রেণিবিন্যাসের সর্বনিম্ন ধাপ ও মৌলিক একককে প্রজাতি বলে ।

খ নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে কোনাে জীবের নামকরণে প্রথমে গণের নাম এবং পরে প্রজাতির নাম ব্যবহার করে দুই শব্দের সমন্বয়ে যে নামকরণ করা হয়ে থাকে তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে।

খ) সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারােলাস লিনিয়াস ১৭৫৮ সালে দ্বিপদ নামকরণের নীতিমালা প্রবর্তন করেন। যেমন- মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। এক্ষেত্রে Homo হলাে মানুষের গণ-এর নাম এবং sapiens হলাে মানুষের প্রজাতি নামের নির্দেশক।

গ)

উদ্দীপকের করিমের প্রাপ্ত প্রাণীগুলাের মধ্যে শামুক হলাে অপ্রতিসম প্রাণী যা মলাস্কা পর্বের অন্তর্ভুক্ত। নিচে মলাস্কা পর্বের বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ করা হলাে-

১. এ পর্বের প্রাণীদের দেহ অপ্রতিসম বা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ।
২. দেহ নরম ও অখণ্ডায়িত।
৩. দেহ সাধারণত এক বা একাধিক খােলক দ্বারা আবৃত।
৪. দেহের অঙ্কীয়, দিকে পেশিযুক্ত পদ বিদ্যমান যা চলন, গর্ত করা বা সাঁতারের জন্য বিভিন্নভাবে অভিযােজিত।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অর্ধমুক্ত ধরনের অর্থাৎ রক্তনালি ও হিমােসিল উভয়ই থাকে।
৬. ফুলকা বা ম্যান্টল পর্দা দ্বারা শ্বসন সম্পন্ন হয়, স্থলচরদের ক্ষেত্রে পালমােনারি থলির বিকাশ ঘটে।
৭. রক্তে হিমােসায়ানিন ও অ্যামিবােসাইট কণিকা থাকে।
৮. মলাস্কাজাতীয় প্রাণী ভিন্ন লিঙ্গবিশিষ্ট এবং ডিম পাড়ে।

ঘ.

উদ্দীপকের উল্লেখিত মাছ, শামুক ও ব্যাঙ এর মধ্যে শামুক মলাস্কা পর্বের প্রাণী এবং মাছ ও ব্যাঙ কর্ডাটা পর্বের Vertebrata উপপর্বের প্রাণী। মাছ ও ব্যাঙ একই পর্বের হলেও এরা শ্রেণিগতভাবে ভিন্ন। এর কারণ হলাে প্রাণী দুটির মধ্যকার বৈশিষ্ট্যের বৈসাদৃশ্য। আমরা জানি,জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাস সাধারণত ক্রমান্বয়ে অনুন্নত থেকে উন্নত জীবের দিকে ধাবিত হয়। এক্ষেত্রে প্রাণীদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করা হয়ে থাকে। এ সময় শ্রেণিবিন্যাসের রীতি অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যের বিচারে অনুন্নত জীবগুলাে শ্রেণিবিন্যাসের প্রথম দিকে এবং উন্নত জীবগুলাে শ্রেণিবিন্যাসের শেষের দিকে থাকে।

উদ্দীপকে মাছ ও ব্যাঙ কর্ডাটা পর্বের হলেও মাছ অ্যাকটিনােপটেরিজি শ্রেণির এবং ব্যাঙ অ্যামফিবিয়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ।মাছের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এদের অন্তঃকঙ্কাল অস্থি নির্মিত; দেহ সাধারণত গ্যানয়েড, সাইক্লয়েড অথবা টিনয়েড ধরনের আঁইশ দ্বারা আবৃত; কিছু কিছু মাছ, আঁইশবিহীন, যেমন- শিং, মাগুর, টেংরা প্রভৃতি; মুখছিদ্র মস্তকের সম্মুখভাগে অবস্থিত; লেজের পাখনা দ্বিধা বিভক্ত ও সমান; শ্বসন অঙ্গে চার জোড়া ফুলকা কানকো দ্বারা আবৃত; পুচ্ছ পাখনা হােমােসাকাল ধরনের; দেহের অভ্যন্তরে পটকা থাকে। অন্যদিকে ব্যাঙের ত্বক নগ্ন, সিক্ত ও গ্রন্থিময়; হৃৎপিণ্ড তিন প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট; অগ্রপদে ৪টি ও পশ্চাৎপদে ৫টি করে নখরবিহীন আঙ্গুল থাকে; লার্ভা ফুলকা এবং পরিণত দশা ফুসফুস, ত্বক ও মুখবিবরের গলবিলীয় মিউকাস পর্দার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়।উপরােক্ত বৈশিষ্ট্যের বৈসাদৃশ্যের কারণেই মাছ ও ব্যাঙ একই পর্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও আলাদা শ্রেণিতে স্থান পেয়েছে।

শেষ কথা

এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া আছে। আশা করছি এই পোস্ট থেকে প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এইচ এস সি সাজেশন সংগ্রহ করতে পেরেছেন।  এই রকম আরও সাজেশন ও প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সংগ্রহ করতে আমার সাথেই থাকুন।

আরও দেখুনঃ

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *