২৮শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে স্বপ্নের মেট্রো রেল এর যাত্রা শুরু হয়েছে। এই দিন সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভ্রমনের মাধ্যমে মেট্রোরেলের যাত্রা কে উদ্বোধন করেন। ২৯শে ডিসেম্বর থেকে নিয়মিত সাধারণ যাত্রীগণ এই মেট্রো রেল ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে শুরুতে সারাদিনে শুধুমাত্র ৪ ঘন্টা এই মেট্রোরেল এর কার্যক্রম চালু থাকবে। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত উত্তরা হতে আগারগা পর্যন্ত ননস্টপ মেট্রো রেল এর যাত্রা চলমান থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে এর পরিধি এবং চলাচলের সময় বাড়ানো হবে।
মেট্রোরেলে ভ্রমনের পূর্বে অবশ্যই প্রত্যেকটি যাত্রীকে টিকিট কাটতে হবে। কোনভাবেই বিনা টিকিটে মেট্রোরেলে প্রমাণ করা যাবে না এবং এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। মেট্রো রেলের টিকিট কাটার ২ টি সিস্টেম বিদ্যমান রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে এমআরটি পাস বা স্থায়ী কার্ড, এর মানে হচ্ছে যে সকল যাত্রীগণ প্রতিনিয়ত মেট্রো রেলে যাতায়াত করবেন তাদের একটি স্থায়ী প্লাস্টিক কার্ড করতে হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা থাকতে হবে কার্ডে, তাহলেই শুধুমাত্র এই কার্ড দিয়ে যাত্রা করা যাবে। অপরদিকে একক যাত্রার জন্য আলাদা একটি সিস্টেম চালু থাকবে। যাত্রীগণ মেট্রো স্টেশন থেকে যাত্রার জন্য শুধুমাত্র একটি টিকিট ক্রয় করতে পারবে।
অনেকেই মেট্রো রেলের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে অবগত নয় তারা অনলাইনে টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য খুজতেছেন তাই আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনি মেট্রোরেল যাত্রার জন্য মেট্রো রেলের টিকিট কাটবেন। আমি আপনাদের সাথে স্থায়ী কার্ড ও এখন যাত্রার জন্য কিভাবে টিকিট ক্রয় করতে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করব।
মেট্রো রেলের টিকেট কাটার নিয়ম ২০২৩
এখন আমরা জানবো কিভাবে আপনি খুব সহজেই মেট্রো রেলের টিকিট কাটতে পারবেন। যাত্রীরা চাইলে খুব সহজেই প্রত্যেকটি মেট্রো স্টেশন থেকে এই দুই ধরনের টিকিট কাটতে পারবে । প্রতিটি স্টেশনে থাকা টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের কাছ থেকে এবং টিকিট বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটা যাবে খুব সহজে। আপনি যদি কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে ইচ্ছা করে থাকেন, তাহলে তাদেরকে আপনার যাত্রার বিস্তারিত বর্ণনা করুন। তারাই আপনাকে টিকিটের মূল্য প্রদান সাপেক্ষে টিকিট প্রদান করবে।
অনেকেই আছেন যারা স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন থেকে মেট্রো রেলের টিকিট কাটতে ইচ্ছুক। টিকিট বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে হলে যাত্রীকে প্রথমে মনিটরে বাংলা অথবা ইংরেজি অপশন নির্বাচন করতে হবে। এরপর স্কিনে প্রেস করে সিঙ্গেল বা পারমানেন্ট জার্নির জন্য টিকিট নির্বাচন করতে হবে।
এরপর আসবে যাত্রীদের গন্তব্যের তালিকা। আপনি কোন স্টেশন থেকে কোন স্টেশনে যেতে ইচ্ছুক তা নির্বাচন করুন। স্টেশন নির্বাচন করার পর কোন স্টেশনের কত ভাড়া সেই তালিকা স্কিনে দেখাবে। সেখান থেকে যাত্রীকে তার গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করতে হবে। তারপর আপনি কয়টি টিকিট কাটতে চান তার আপশন আসবে। সিঙ্গেল জার্নির জন্য একজন যাত্রী একবার যাত্রায় সর্বোচ্চ পাঁচটি টিকিট ক্রয় করতে পারবে। এরপর ওকে বাটনে চাপ দিলেই মেশিন টাকা চাইবে। টাকা দিলেই টিকিট বেরিয়ে আসবে। উল্লেখ্য মেশিনে সর্বনিম্ন ২০ টাকা আর সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা প্রবেশ করানো যাবে।
এমআরটি পাস বা স্থায়ী কার্ড কিভাবে পাব?
যারা প্রতিনিয়ত ঢাকা শহরে যাতায়াত করে থাকেন তারা জানে যে যানজটের কি দুর্ভোগ। তাই বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে মেট্রোরেল বাস্তবায়িত হয়েছে। আমাদের মধ্যে যারা নিয়মিত মেট্রোরেলে যাত্রা করবেন তাদের জন্য একটি সুবিধা হচ্ছে একটি স্থায়ী কার্ডের মাধ্যমে আপনি ট্রেনের মেট্রো রেলের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। কিন্তু মেট্রোরেলের স্থায়ী কার্ড পেতে হলে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন এর সাহায্যে অনলাইন থেকে স্থায়ী কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকী স্থায়ী কার্ড সম্পর্কে বলেন, মেট্রোরেলের প্রতিটা স্টেশনে এই স্থায়ী টিকিট পাওয়া যাবে। তবে পরবর্তী সময়ে এমআরটি পাস রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যাবে। যাত্রীরা সেসব জায়গা থেকে এই টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গেও কথা বলছি। সেটা হলে যাত্রীরা এমআরটি পাস মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রিচার্জ করতে পারবে।
মেট্রো রেলের ভাড়ার তালিকা
মেট্রোরেলের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া পাঁচ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯শে ডিসেম্বর থেকে সাধারণ যাত্রীগন মেট্রো রেল ভ্রমণ করতে পারবে। তবে এখন শুধু দিনে ৪ ঘন্টা অর্থাৎ সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত মেট্রো রেল চলাচল করবে। এবং এই রেল শুধুমাত্র উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে। আপনি যদি মেট্রোরেলের ভাড়া তালিকা পেতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে নিচে থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
- উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে উত্তরা সেন্টার বা উত্তরা সাউথ স্টেশন এর ভাড়া ২০ টাকা
- উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে পল্লবী ও মিরপুর 11 স্টেশন এর ভাড়া ৩০ টাকা
- উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে মিরপুর 10 ও কাজীপাড়া স্টেশন এর ভাড়া ৪০ টাকা
- উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা
- উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৬০ টাকা
সর্বশেষ কথা
মেট্রো রেলের টিকিট কাটার নিয়ম নিয়ে লিখিত আজকের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এখানে আমি আপনাদের সাথে স্থায়ী কার্ড বা একক যাত্রার জন্য মেট্রো রেলের টিকিট কিভাবে ক্রয় করবেন এ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশাকরি ইতোমধ্যে আপনি মেট্রো ট্রেনের টিকিট কিভাবে কিনতে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ সুতরাং নিজে টিকিট কিনতে ট্রেন ভ্রমন করুন এবং অন্যকেও টিকিট কাটতে উৎসাহিত করুন। আপনার মেট্রো রেলের যাত্রা শুভ হোক। ধন্যবাদ
আমি সুজন। আমি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা তে বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা পলিটেকনিকে পড়ালেখা করছি। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি আমি অনলাইনে লেখা লেখি করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে টেকনোলোজি বিষয়ে লেখা লেখি করতে আমার ভাল লাগে। তাই আপনাদের জন্য আমি এই ওয়েবসাইট টি তৈরি করেছি। এখানে আপনি বাংলাদেশের অনালাইন সম্পর্কিত প্রায় সকল ধরনের তথ্য খুজে পাবেন। ধন্যবাদ।